বিশ্ব সৃষ্টির ধারনা একটি পর্যালোচনা

বিশ্ব সৃষ্টির ধারনা


বিশ্ব সৃষ্টির ধারনা : Ex nihilo nihil fit , Creatio Ex Nihilo ,Creatio Ex Deo।

বেশ কয়েক রকমের ধারনা আছে। তবে আমি এই তিনটি নিয়েই আলোচনা করবো এবং জটিল শব্দ গুলি avoid করবো।

==

ভয় পাবেন না।আমি সহজ করে দেবার চেষ্টা করবো।যদিও সহজ করতে গেলে,আনেক কথা যায় না বলা তবুও কমফর্ট জোনে থেকেই চেষ্টা করে দেখি।problem হলো লেখাটা দীর্ঘ হবে।আপনারা হাতে সময় নিয়ে ধী মস্তিষ্কে বসুন।এই গুলি জানলে জ্ঞানের প্রখরতা বৃদ্ধি পাবে।আমাকে অনেক অনেক প্রশ্নও করতে পারবেন।

==

প্রাচিন কাল হতে আজ অবধি  মানুষ সৃষ্টি কর্তা, সৃষ্টি কর্তার বিশ্ব সৃষ্টির সম্ভাব্য প্রক্রিয়া এক কথায় একজন active সৃষ্টিকর্তার কার্যকরন অনুসন্ধান করে চলেছে।  সেই বিশ্ব সৃষ্টির ইশ্বরের প্রক্রিয়া কেই বিভিন্ন সময়ের চিন্তার  মূলত ঐ তিনটি  প্রকার ভেদের উপরই আজকের আলোচনা।

 ===

প্রথমেই চলুন আলোচনা করি “ Ex nihilo nihil fit” বা ENN কে নিয়ে।এটা লাতিন ভাষা যার অর্থ হচ্ছে, "nothing comes from nothing",  অর্থাৎ কোন কিছু nothing বা কিছু নাই থেকে আসতে পারে না।এখানে বলতে চাওয়া হচ্ছে যে বিশ্বের সকল জিনিষ বিশ্ব সৃষ্টির পূর্বে কালে থাকা জিনিষ দিয়ে সৃষ্টি হয়েছে।এই ধারনা টি দেন গ্রীক দার্শনিক Parmenides ।তাই যেহেতু nothing থেকে সর্বদা nothingই  আসে তাই Something  পদার্থ থেকেই সব পদার্থ এসেছে।

==

প্রাচিন যুগে এই ধারনাটাই করা হতো যে বিশ্ব এটা আকারহীন বস্তু থেকে সৃষ্টি হয়েছে।। বিশ্বের  সর্ব প্রথম সুমিরিয়ান সভ্যতায় ভাবা হতো Nammu নামের এক  দেবীর আকার কল্পনা করে যে এই  দেবী স্বর্গমর্ত্যকে  জন্মদান করে  চিরজীবি রয়ে গেছে।     তারমানে Ex nihilo nihil fit বলতে চায় একটা primordial জিনিস দিয়ে পরবর্তিতে জাগতিক জিনিষ সৃষ্ট হয়েছে।অর্থা বস্তু থেকে বস্তু সৃষ্টি হয়েছে। 

==

এই বক্তব্যের বিপরীতে ইহুদী রাব্বী Saadia Gaon পরিচিত করালেন creation ex nihilo ,(CEN) অর্থাৎ Creation out of nothing। অর্থ শূন্য থেকে সৃষ্টি।এটা দিয়ে ঐ Ex nihilo nihil fit কে খন্ডন করে বলা হলো যে ঐ সৃষ্টির পূর্বের যে Primordial something থেকে জাগতিক something সৃষ্টি হয়েছে সেটা সঠিক না। কারন তখন প্রশ্ন উঠবে ঐ সৃষ্টির পূর্বের primordial বস্তু গুলিকে আবার কে সৃষ্টি করেছিল। এই ভাবে প্রশ্নের পর প্রশ্ন চলতে থাকবে যাকে বলে infinite regress।

==

এই CEN বলে যে কোন বস্তু কখনো শাশ্বত  বা eternal হতে পারে না বরং এক শাশ্বত সত্বা জাগতিক বস্তু সৃষ্টি করেছে।

==

এখন চলুন Ex nihilo nihil fit , Ex Nihilo এর  একটু  ক্রিটিক্যাল আলোচনা করি।

==

আচ্ছা  বিশ্বের সব কিছুই কি সৃষ্টি হয়েছে কিছু থেকে ( is everything  created from something?)? যদি উত্তর হয় হাঁ তাহলে প্রশ্ন উঠে, ঐ কিছু বা something টা কোথা থেকে এলো? 

==

Creatio ex nihilo (Latin for “creation out of nothing”) হচ্ছে একটা দার্শনিক এবং ধর্ম তত্বীও নীতি যাতে বলা হয় সৃষ্টিকর্তা out of nothing তথা কোন কিছু নাই বা শূন্য থেকে সবকিছু সৃষ্টি করেছেন। কিন্তু ঐ দিকে Ex nihilo nihil fit বলে nothing থেকে some thing সৃষ্টি হয় না। 

==

এই দুটি বিষয় তুলনা করার আগে আবার চলুন আরেকটি আলাপ করে নেওয়া যাক। সৃষ্টি বা creation বলতে কি বুঝি সেটা আগে জানা দরকার। বস্তুকে কি সৃষ্টি বা create বা ধ্বংস করা যায়? নাকি বস্তু কেবল মাত্র এনার্জি space এবং time এ নীজেকে প্রকাশ করে চলেছে?

==

Einstein এই রহস্যের একটা সমাধান দিলেন  এই সম্পর্কের একটা সমীকরনে ( equation) মাধ্যমে যেটা হচ্ছে, E=mc2।

==

এই equation দিয়ে আমরা জানতে পারলাম energy এবং mass আন্তসংযোগীয় (interchangeable) এবং তারা আবার একই সময় দুইটি ভিন্ন রূপ। তারমানে matter প্রকৃত পক্ষে  এক ধরনের এনার্জি।তাই তাত্ত্বিকভাবে সঠিক কন্ডিশনে এনার্জি থেকে পদার্থের সৃষ্টি করা যেতে পারে।আর বিগব্যাঙ থিওরি অনুযায়ী ঠিক এটাই সংগঠিত হয়ে ছিল। এই থিওরি অনুযায়ী এনার্জি অতিঘন এবং উত্তপ্ত অবস্হা থেকে বিস্তৃতি লাভ করে পর্যায়ক্রমে শীতল হয়ে বর্তমান পদার্থের সৃষ্টি করে।

==

এখন কথা হচ্ছে এই এনার্জি কোথা থেকে এলো?  What caused the energy? মানে ঐ এনার্জিটা কার্যকরনের পিছনে কিসের ভুমিকা ছিল? বা যদি প্রতিটি জিনিষের পিছনে একটা কারন ( cause) থাকে তাহলে who caused the energy? ( কার কারনে এনার্জি এলো?)।

==

তাই বলা যায় এই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের যদি শুরু থাকে তাহলে ঐ শুরু হবার পিছনে অবশ্যই একটা কজ cause থাকতে হবে। এবং ঐ কজ বা cause বা করন এমন কিছু হতে হবে যা ঐ সৃষ্ট বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের অংশ হতে পারবে না।ঐটার বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পূর্বেই exist অর্থাৎ বিদ্যমান থাকতে হবে যা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির কারন বা cause ছিল।

==

আর যেহেতু সৃষ্ট Bigbang  এর মাধ্যমে  physical বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টি তথা যতো physical জিনিষ  বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড শুরু ফলেই সৃষ্টি হয়েছে তাই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পূর্বে কোন physical কিছুই ছিল না। তাই বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পূর্বে যেই cause টা বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডকে সৃষ্টি করেছে সেই কজ, cause কোন যুক্তিতেই কোন physical subject হতে পারে না।

==

তাহলে ঐ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পিছনে ঐ  non- physical করন বা cause টা কি হতে পারে? 

==

এটা প্রথমত হতে পারে সৃষ্টিকর্তার মতো কেহ বা কোন ধরনের law of physics হতে পারে। কিন্তু বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির পিছনে যদি অন্য কোন ধরনের law of physics থেকে থাকে তাহলে প্রশ্ন উঠে ঐ law of physics টার সৃষ্টির cause টা কোথা থেকে এলো?

==

এখন এই ক্ষেত্রে ঐ ex nihilo nihil fit ধারনাটা এসে পরে। যদি প্রতিটি পদার্থের সৃষ্টির পিছনে cause থাকে, তাহলে তো cause এর  infinite regress  চলে আসবে। Infinite regress বলতে একটা সাধারন উদাহরন দেই। যেমন এই বিশ্ব সৃষ্টি করেছে একটি পদার্থ তাহলে ঐ পদার্থকে কে সৃষ্টি করেছে? এই ভাবে অনন্তকাল তাকে কে সৃষ্টি করেছে আবার ঐ টাকে কে সৃষ্টি করেছে এই প্রশ্ন চলতেই থাকবে তাই এই infinite regress মান্য করা হয় না।

==

তাই সৃষ্টির পিছনে যদি cause থাকে এবং সে cause গুলি infinite regress এ মান্য করা যেহেতু হয় না সেই হেতু একটা পর্যায়ে এমন একটি cause এসে দাঁড়ায় যেই cause এর সৃ্ষ্টির কোন cause বা করন নাই।সেটাই হয়ে পরবে uncaused cause তথা সৃষ্টিকর্তা।

==

এই ক্ষেত্রে ঐ ex nihilo nihil fit কিন্তু অবশেষে uncaused cause এই creation ex nihilo এর কাছে আত্মসমপর্ণ করে।

==

এবার আরেকটু বিজ্ঞান ও যুক্তি নিয়ে খেলি চলুন। আচ্ছা নাস্তিকরা বলে matter বা পদার্থ সৃ্ষ্টিও হয় না ধ্বংসও হয় না।যদি তাই হয় তাহলে  ইউনিভার্সের শুরু কিভাবে সম্ভব হলো?যদি বিশ্বের শুরু বলে কিছু না থাকে তাহলে তো বিশ্বে infinite number বা অসীম সংখ্যায় পদার্থ থাকতে হবে।কিন্তু অসীম পদার্থ থাকলে অসীম মধ্যাকর্ষন শক্তি চলে আসবে যেটার ফলে বিশ্ব তো চলবে না কলাপ্স করে যাবে অর্থাৎ ধ্বংস হয়ে যাবে। 

==

সেই কারনেও কিন্তু বিশ্বের অবশ্যই একটা শুরু থাকতে হবে।এবং এই সৃষ্টির কারনেই সময়ের সৃষ্টি হবে।তাই আমরা যখন অতীত বা ভবিষ্যতের কথা বলি তখন কিন্তু আমরা সময়কেই মেনে নেই। তাই সময় যদি না থাকে তাহলে অতীত,ভবিষৎ বলে কিছু থাকবে না। তাই সময়ও বিশ্ব সৃষ্টির সাথে সাথে সৃষ্টি হয়েছে।সেক্ষেত্রে বিশ্ব ধ্বংস হওয়া মানে সময়, পদার্থ সব কিছুর ধ্বংস হওয়া।

==

   তাই এই তিনটি জিনিষ একসাথে চলে। যদি space না থাকে তাহলে পদার্থ রাখবেন কোথায়,যদি সময় না থাকে তাহলে পদার্থটা  স্হানে কখন রাখবেন,আর যদি পদার্থ না থাকে তাহলে space এ কখন,কি রাখবেন? দারুন না? 

==

তাই এই পদার্থ,space এবং সময় একই সাথে সৃষ্টি হয়েছে।এখন যে নামেই ডাকুন না কেন সেই স্বত্বা এই time,space,matter এর বাহিরে এবং সেটাকে  infinite তথা অসীম হতে হবে।

==

তাই প্রমান হয়  Ex Nihilo Nihil Fit  এর চাইতে Creatio Ex Nihilo makes more sense।

==

এবারে ,  “Creatio ex deo” নিয়ে কিছু বলা যাক। আসলে এইটা নিয়ে নানা মুনির নানা মত আছে। তাই আমি এখানে  occam's razor ব্যবহার করবো। আমি অবশ্য এখানে সবটাতেই Occam’s razor ব্যবহার করেছি সকলে কে একটা ধারনা দেবার জন্য। কারন এই আলোচনায় এতো জটিল জটিল শব্দ ব্যবহার করা হয় তা সাধারন মানুষের মাথার উপর দিয়ে যাবে। তা করলে পন্ডিতি ফলানো যায় কিন্তু কেউ যদি না বুঝি তাহলে ঐ পান্ডিত্যের ফলাফল শূন্য।

==

 যাই হোক  Occam’s razor  হচ্ছে বেশী বাড়াবাড়ি না করে সবচাইতে কমন বিষয়টি বর্ননা করা।মানে জটিল জটিল ব্যাখ্যা না আনা। ডাক্তাররা সব সময় এই Occam’s razor ব্যবহার করে। শরীরের কোন একটা উপসর্গ দেখা দিলে তা অনেক প্রানঘাতি রোগের লক্ষনও হতে পারে কিন্তু ডাক্তাররা এই স্হলে কমন অসুখগুলিকেই উপসর্গ দেখে প্রথমে টার্গেট করেন।

==

যাইহোক সোজা কথায় Creatio ex deo তে বলা হয় সৃষ্টিকর্তা তার নীজের অনুধাবন,imagination, তার নিজস্ব সত্বা,তার সহজাত গুন দিয়ে বিশ্ব সৃষ্টি করেছেন।বিশ্বকে তিনি নীজের মধ্যেই ধারন করেন।তার অর্থ সমগ্র  কিছুর মধ্যে সৃষ্টি কর্তা নিহিত। খৃষ্টান Gnostics, জৈন ধর্ম এই আইডিয়া ধারন করে।

==

 তবে ঐ যে বললাম এই সোজা জিনিষটাকে জটিল ব্যাখ্যা দিয়ে, creation ex nihilo এর সাথে যুক্ত করার চেষ্টাও করা হয় কিন্তু ধারনাটি খুব সহজে pantheism, naturalists দের সাথে যায়। এটি অনেকটা paganism  বা পৌত্তলিকতা। কিছুটা পার্থক্য আছে তবে সেটা গৌন। এদের কথায় সকল সৃষ্টি হচ্ছে গডের অংশ। এটার বিশাল সমস্যা আছে। 

==

এই যুক্তির পক্ষে Efficient Cause Principle কে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এই বিশ্বের ধ্বংস আছে অর্থাৎ গড নিজেরই অংশকে ধ্বংস করে দেবে?আসলে occam's razor ব্যবহার করলে এই ধারনাটি প্রচুর জটিল। আপনার Milton এর Paradise lost পড়েছেন? ঐটা এই Creatio ex deo উপর ভিত্তিকরে লেখা।

মূলত মূল ধারার ইহুদী,খৃষ্টান ও ইসলাম Creatio Ex Nihilo ধারনাটির পক্ষে।

Read Also :

Getting Info...

Post a Comment