আমি কেন নাস্তিক নই?

আমি কেন নাস্তিক নই?

আমি কেন নাস্তিক নই?

একদম সোজাসাপটা যুক্তি ব্যাবহার করা যাক। ধরুন আপনি সুনসান একটা মরুভূমিতে গেলেন, গিয়ে দেখলেন মরুভূমির কোনো একখানে একটা তাবু পড়ে আছে। তাবু দেখেই আপনার মাথায় চট করে আসবে যে তাবু যেহেতু আছে, তাবুর মালিকও আছে। 

মালিক ছাড়া তাবু উড়ে উড়ে মরুভূমিতে এসে পড়তে পারে না। এখানে আপনি বলবেন না যে তাবু একটা কোইনসিডেন্সের মাধ্যমে এসেছে, বা তাবুর কোনো মালিক নেই। এটা কি সহজ না? স্রষ্টা আছে, সৃষ্টিও আছে। হুম, এখন প্রশ্ন আসতে পারে তাহলে স্রষ্টাকে কে বানালো। 

এখানে ইনফিনিটি রিগ্রেসন দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়। তবে এটাকে আরেকভাবেও ব্যাখ্যা করা যায়। সৃষ্টি আর সময়কে কো এক্সিস্টেন্ট বা একইসাথে বর্তমান হতে হবে। কারণ আমরা জানি বিগ ব্যাং এর আগে কিছুই ছিল না, সময়ও না। বিগ ব্যাং ঘটার পর সময় অস্তিত্ব লাভ করে, সেই সাথে অন্য সবকিছু। 

তো আমরা আস্তিকেরা বলে থাকি স্রষ্টা বিগ ব্যাং ঘটিয়েছেন। তিনি বিগ ব্যাং ঘটিয়ে থাকলে অবশ্যই তাকে বিগ ব্যাং এর আগে এক্সিস্ট করতে হবে। যেহেতু, বিগ ব্যাং এর আগে সময় বলে কিছু ছিল না এবং সময় ছাড়া সৃষ্টি অসম্ভব, তাই স্রষ্টাকে কে সৃষ্টি করেছে এই পুরো কথাটাই অযৌক্তিক।

এবার নাস্তিকদের বিশ্বাস নিয়ে একটু বলি। "স্রষ্টা নেই", এটা আজ পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারে নি৷ স্রষ্টা আছে এটা প্রমাণ করার কিছু নেই, ওই যে মরুভূমিতে তাবু দেখলেও এর কেন মালিক আছে সে চিন্তায় আপনি হাবুডুবু খান না। স্রষ্টার অস্তিত্বের পুরো ব্যাপারটাই Self Evident. নাস্তিকতায় আরো যেসব দাবি করা হয় যেমন মৃত্যুর পর আমরা আবার nothing হয়ে যাব, এই দাবির পক্ষেও তাদের কোনো প্রমাণ নেই। আপনি যদি ভেবে দেখেন, নাস্তিকতার মূল কন্সেপ্ট টাই বিভিন্ন প্রকার অপ্রামাণ্য অনুমানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে। তো এরকম একটা জিনিস আমি কেন মেনে নিব? 

ওহ, বিজ্ঞানের অনুসরণ করলেও সেটা নাস্তিকতার পালে কোনো হাওয়া দেয় না। পদার্থবিদ Marcelo Gleiser এব্যাপারে বলেন - " I honestly think atheism is inconsistent with the scientific method". কেন তাও জেনে আসতে পারেন এখান থেকে।

এ গেল যৌক্তিক হিসাব। এবার ভালো খারাপের হিসাবে একটু আসা যাক। নাস্তিকতা যে আমাদের জন্য খারাপ এবং স্রষ্টায় বিশ্বাস আমাদের জন্য ভালো, এরপক্ষে বাস্তবিকভাবেই পর্বতপ্রমাণ ডাটা রয়েছে। নাস্তিকতা মাদক, আত্নহত্যাসহ আরো অসংখ্য খারাপ জিনিসের হার বাড়িয়ে দেয়, যেখানে স্রষ্টায় বিশ্বাস করে তার উল্টোটা।

আর যদি মোরালিটি বা নৈতিকতার কথা বলি, তবে নাস্তিকতায় কোনো নৈতিকতা নেই। স্বয়ং রিচার্ড ডকিন্সও স্বীকার করেছেন যে Evil বলে কিছু নেই। তারা বড়জোর সাব্জেক্টিভ মোরালিটি বানাতে সক্ষম, যেটা সময় সময় পরিবর্তনশীল। অব্জেক্টিভ মোরালিটি বানানোর মতো কোনো মানদণ্ড বা স্ট্যান্ডার্ড নাস্তিকতায় নেই।

সবশেষে, যদি উপরের সব আলোচনাকে ডাস্টবিনেও ফেলে দেওয়া হয়, তবুও স্রষ্টায় বিশ্বাস করাটাই নিরাপদ। Pascals Wager এর নাম শুনেছেন নিশ্চয়ই। যদি আমি আস্তিক হিসাবে মারা যাই, তাহলে মৃত্যুর পর কিছু না থাকলেও খুব একটা যায় আসে না। আরে, নাস্তিকরা সত্যি বলে থাকলে আমি যে ভুল ছিলাম এটা ভাবারও টাইম পাবো না! আর যদি দেখি মৃত্যুর পর জীবন আছে, তাহলে এর জন্যই তো আমি প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। 

পক্ষান্তরে আমি নাস্তিক হিসাবে মারা গিয়ে যদি মৃত্যুর পর কিছু না থাকে, তাহলে আমার পরিণতি আস্তিকের মতই হবে। কিন্তু যদি দেখি পরকাল আছে..... তাহলে বুঝতেই পারছেন আমি কোথায় যাব!

যাই হোক, মোদ্দাকথা হলো কেউ যদি নাস্তিক হতে চায় হোক গিয়ে, আমার কিছুই আসে যায় না। তবে নাস্তিক হওয়ার জন্য ভালো কোনো কারণ আমি খুজে পাইনি৷ তাই আমি একজন স্রষ্টার অস্তিত্বে বিশ্বাসী মুসলিম।

Read Also :

Getting Info...

Post a Comment